সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার কাজে লাগবে এমন কিছু কুরআনে আছে কি

 





 

আমার কাজে লাগবে এমন কিছু কুরআনে আছে কি?


কুরআন সম্পর্কে একটি প্রচলিত ধারণা হলোঃ এটি একটি উচ্চমার্গের ধর্মীয়, নৈতিক, ঐতিহাসীক বই, যা-তে বড় বড় জটিল ব্যাপারগুলোই শুধু বলা আছে। দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগে এমন সাধারণ ব্যাপারগুলোর জন্য কুরআন নয়। যেমন আমরা কিভাবে কথা বলবো, কিভাবে বেড়াতে যাবো, কীভাবে বাচ্চাদের বিছানা দেবÑ এসব খুঁটিনাটি সাধারণ দৈনন্দিন ব্যাপারের জন্য কুরআন নয়।


আসলে কী তা-ই?

দেখা যাক মানুষের ¯্রষ্টা আল্লাহ তায়ালা নিজে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার জন্য কি শিখিয়েছেনÑ


কথা বলা

১) যখন আমি বনী ইসরাঈলদের কাছ থেকে (এ মর্মে) প্রতিশ্রæতি নিয়েছিলাম যে, তোমরা আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কারো এবাদাত করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে, আত্মীয় স্বজন, এতীম-মেসকীনদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে, মানুষদের সুন্দর কথা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত প্রদান করবে; (কিন্তু এ সত্তে¡ও) তোমাদের মধ্যে সামান্য কিছুসংখ্যক লোক ছাড়া অধিকাংশই অতপর ফিরে গেছে, এভাবেই তোমরা (প্রতিশ্রæতি থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলে।      ২ : ৮৩।



২) হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং (সর্বদা) সত্য কথা বলো, ৩৩ :৭০



৩) (হে বৎস, যমীনে চলার সময়) তুমি মধ্যম পন্থা অবলম্বন করো, তোমার কন্ঠস্বর নীচু করো, কেননা আওয়াযসমূহের মধ্যে সবচাইতে অপ্রীতিকর আওয়ায হচ্ছে গাধার আওয়ায। ৩১ : ১৯।



৪) (এর মাধ্যমে) তাদের (পরিচয়ও) তিনি জেনে নেবেন, যারা (এই চরম মুহূর্তে) মোনাফেকী করেছে, এ মোনাফেকদের যখন বলা হয়েছিলো যে, (সবাই এক সাথে) আল্লাহর পথে লড়াই করো, অথবা (কমপক্ষে নিজেদের শহরের) প্রতিরক্ষাটুকু তোমরা করো, তখন তারা বললো, যদি আমরা জানতাম আজ (সত্যি সত্যিই) যুদ্ধ হবে, তাহলে অবশ্যই আমরা তোমাদের অনুসরণ করতাম, (এ সময়) তারা ঈমানের চাইতে কুফরীরই বেশী কাছাকাছি অবস্থান করছিলো, এরা মুখে এমন সব কথা বলে যা তাদের অন্তরে নেই; আর এরা যা কিছু গোপন করে আল্লাহ তায়ালা তা সম্যক অবগত আছেন।     ৩ : ১৬৭।




৫) যারা অর্থহীন বিষয় থেকে বিমুখ থাকে, ২৩ : ৩। এরা যখন কোনো বাজে কথা শুনে তখন তা পরিহার করে চলে এবং (এদের) বলে, আমাদের কাজের (দায়িত্ব) আমাদের (ওপর), আর তোমাদের (কাজের) দায়িত্ব তোমাদের (ওপর), তোমাদের জন্যে সালাম, তা ছাড়া আমরা জাহেলদের সাথে তর্ক করতে চাই না! ২৮ : ৫৫।





৬) ওহে মানুষ! তোমরা যারা ঈমান এনেছো, তোমাদের কোনো সম্প্রদায় যেন অপর সম্প্রদায়কে (নিয়ে) কোনো উপহাস না করে, (কেননা) এমনও তো হতে পারে, (যাদের আজ উপহাস করা হচ্ছে) তারা উপহাসকারীদের চাইতে উত্তম, আবার নারীরাও যেন অন্য নারীদের উপহাস না করে, কারণ, যাদে উপহাস করা হয়, হতে পারে তারা উপহাসকারিণীদের চাইতে অনেক ভালো। (আরো মনে রাখবে), একজন আরেকজনকে (অযথা) দোষারোপ করবে না, আবার একজন আরেকজনকে খারাপ নাম ধরেও ডাকবে না, (কারণ) ঈমান আনার পর কাউকে খারাপ নামে ডাকা একটা বড়ো ধরনের অপরাধ, যারা এ আচরণ থেকে ফিরে না আসবে তারা হবে (সত্যিকার) যালেম। ৪৯ : ১১।




৭) হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরা বেশী বেশী অনুমান করা থেকে বেঁচে থাকো, (কেননা) কিছু কিছু (ক্ষেত্রে) অনুমান (আসলেই) অপরাধ এবং একে অপরের (দোষ খোঁজার জন্যে তার) পেছনে গোয়েন্দাগিরী করো না, একজন আরেকজনের গীবত করো না; তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবেÑ আর (অবশ্যই) তোমরা এটা অত্যন্ত ঘৃণা করো; (এসব ব্যাপারে) আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাওবা কবুল করেন এবং তিনি একান্ত দয়ালু। ৪৯ : ১২।


৮) তোমরা কি মানুষদের ভালো কাজের আদেশ করো এবং নিজেদের (জীবনে তা বাস্তবায়নের) কথা ভুলে যাও, অথচ তোমরা সবাই আল্লাহর কিতাব পড়ো; কিন্তু (কিতাবের এ কথাটি) তোমরা কি বুঝো না? ২ : ৪৪।




৯) (হে নবী,) তুমি তোমার মালিকের পথে (মানুষদের) প্রজ্ঞা ও সদুপদেশ দ্বারা আহŸান করো, (কখনো তর্কে যেতে হলে) তুমি এমন এক পদ্ধতিতে যুক্তিতর্ক করো যা সবচাইতে উৎকৃষ্ট পন্থা; তোমার মালিক (এটা) ভালো করেই জানেন, কে তার পথ থেকে বিপথগামী হয়ে গেছে, (আবার) যে ব্যক্তি (হেদায়াতের) পথে রয়েছে তিনি তার সম্পর্কেও সবিশেষ অবহিত আছেন। ১৬ : ১২৫।





১০) এ হচ্ছে (কাবা ঘর বানানোর) উদ্দেশ্য, যে কেউই আল্লাহ তায়ালার (নির্ধারিত) পবিত্র অনুষ্ঠানমালার সম্মান করে, এটা তার জন্যে তার মালিকের কাছে (একটি) উত্তম কাজ (বলে বিবেচিত হবে, একথাও মনে রেখো), সেসব জন্তু ছাড়াÑ সেগুলোর কথা তোমাদের ওপর (কোরআনে) পাঠ করা হয়েছে, অন্য সব চতুষ্পদ জন্তুই তোমাদের জন্যে হালাল করা হয়েছে, অতএব তোমরা (এখন) মূর্তি (পূজা)-র অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থেকো এবং বেঁচে থেকো (সব ধরনের) মিথ্যা কথা থেকে। ২২ : ৩০।



১১) (হে মোমেনরা,) যদি দুনিয়া ও আখেরাতে তোমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার দয়া অনুগ্রহ না থাকতো, তাহলে (একজন নবীপত্মীর) যে বিষয়টির তোমরা চর্চা করছিলে, তার জন্যে এক বড়ো ধরনের আযাব এসে তোমাদের স্পর্শ করতো, ২৪ : ১৪। তোমরা এ (মিথ্যা)-কে নিজেদের মুখে মুখে প্রচার করছিলে, নিজেদের মুখ দিয়ে এমন সব কথা বলে যাচ্ছিলে যে ব্যাপারে তোমাদের কোনো কিছুই জানা ছিলো না, তোমরা একে একটি তুচ্ছ বিষয় মনে করছিলে, কিন্তু তা ছিলো আল্লাহ তায়ালার কাছে একটি গুরুতর বিষয়; ২৪ : ১৫। তোমরা যখন ব্যাপারটা শুনলে তখন সাথে সাথেই কেন বললে না যে, আমরা এ ব্যাপারে কোনো কথা বলবো, আল্লাহ তায়ালা অনেক পবিত্র, অনেক মহান। সত্যিই (এ ছিলো) এক গুরুতর অপবাদ! ২৪ : ১৬।




ব্যবহার


১) হে আদম সন্তানরা, আমি তোমাদের ওপর পোশাক (সংক্রান্ত বিধান) পাঠিয়েছি, যাতে করে (এর দ্বারা) তোমরা তোমাদের গোপন স্থানসমূহ ঢেকে রাখতে পারো এবং (নিজেদের) সৌন্দর্যও ফুটিয়ে তুলতে পারো, (তবে আসল) পোশাক হচ্ছে (কিন্তু) তাকওয়ার (আল্লাহর ভয় জাগ্রতকারী) পোশাক, আর এটাই হচ্ছে উত্তম (পোশাক) এবং এটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহেরও একটি (অংশ, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে), যাতে করে মানুষরা এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ৭ : ২৬।



২) হে আদম সন্তানরা, তোমরা প্রতিটি এবাদাতের সময়ই তোমাদের সৌন্দর্য (-মÐিত পোশাক) গ্রহণ করো, তোমরা খাও এবং পান করো, তবে কোনো অবস্থাতেই অপচয় করো না, আল্লাহ তায়ালা কখনো অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না। ৭ : ৩১।

৩) (এটা তাদের জন্যে) যারা বড়ো বড়ো গুনাহ থেকে এবং (বিশেষত) অশ্লীলতা থেকে বেঁচে থাকে, ছোটোখাটো গুনাহ (সংঘটিত) হলেও (তারা আল্লাহর ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হবে না, কারণ), তোমার মালিকের ক্ষমা (-র পরিধি) অনেক বিস্তৃত; তিনি তোমাদের তখন থেকেই ভালো করে জানেন, যখন তিনি তোমাদের (এ) যমীন থেকে পয়দা করেছেন, (তখনও তিনি তোমাদের জানতেন) যখন তোমরা ছিলে তোমাদের মায়ের পেটে (ক্ষুদ্র একটি) ভ্রæণের আকারে, অতএব কখনো নিজেদের পবিত্র দাবী করো না; আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন কোন ব্যক্তি (তাকে) বেশী ভয় করে। ৫৩ : ৩২।



৪) (হে বৎস,) কখনো অহংকারবশে তুমি মানুষদের জন্যে তোমার গাল ফুলিয়ে রেখে তাদের অবজ্ঞা করো না এবং (আল্লাহর) যমীনে কখনো ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে বিচরণ করো না; নিসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক উদ্ধত অহংকারীকেই অপছন্দ করেন। ৩১ : ১৮।



৫) আল্লাহর যমীনে (কখনোই) দম্ভভরে চলো না, কেননা (যতোই অহংকার করো না কেন), তুমি কখনো এ যমীন বিদীর্ণ করতে পারবে না, আর উচ্চতায়ও তুমি কখনো পর্বত সমান হতে পারবে না। ১৭ : ৩৭।



৬) (হে বৎস, যমীনে চলার সময়) তুমি মধ্যম পন্থা অবলম্বন করো, তোমার কন্ঠস্বও নীচু করো, কেননা আওয়াযসমূহের মধ্যে সবচাইতে অপ্রীতিকর আওয়ায হচ্ছে গাধার আওয়ায। ৩১ : ১৯।



৭) দয়াময় (আল্লাহ তায়ালা)-এর বান্দা তো হচ্ছে তারা, যারা যমীনে নেহায়াত বিন¤্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা (অশালীন ভাষায়) তাদের সম্বোধন করে, তখন তারা নেহায়াত প্রশান্তভাবে জবাব দেয়। ২৫ : ৬৩।



৮) হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরা বেশী বেশী অনুমান করা থেকে বেঁচে থাকো, (কেননা) কিছু কিছু (ক্ষেত্রে) অনুমান (আসলেই) অপরাধ এবং একে অপরের (দোষ খোঁজার জন্যে তার) পেছনে গোয়েন্দাগিরী করো না, একজন আরেকজনের গীবত করো না; তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবেÑ আর (অবশ্যই) তোমরা এটা অত্যন্ত ঘৃণা করো; (এসব ব্যাপারে) আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাওবা কবুল করেন এবং তিনি একান্ত দয়ালু। ৪৯ : ১২।



৯) যখন তোমাদের (সালাম বা অন্য কিছু দ্বারা) অভিবাদন জানানো হয়, তখন তোমরা তার চাইতেও উত্তম পন্থায় তার জবাব দাও, (উত্তমভাবে না হলেও) কমপক্ষে (যতোটুকু সে দিয়েছে) ততোটুকুই ফেরত দাও, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর (পুংখানুপুংখ) হিসাব রাখেন। ৪ : ৮৬।


১০) যে ব্যক্তি অন্ধ তার ওপর কোনো (বিধি নিষেধের) সংকীর্ণতা নেই, যে পঙ্গু তার ওপর কোনো (বিধি নিষেধের) সংকীর্ণতা নেই, যে ব্যক্তি অসুস্থ তার ওপরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এবং তোমাদের নিজেদের ওপরও কোনো দোষ নেইÑ যদি তোমরা তোমাদের নিজেদের ঘর থেকে কিছু খেয়ে নাও, একইভাবে এটাও তোমাদের জন্যে দূষণীয় হবে না, যদি তোমরা তোমাদের পিতা (পিতামহের) ঘরে, মায়েদের ঘরে, ভাইদের ঘরে, বোনদের ঘরে, চাচাদের ঘরে, ফুফুদের ঘরে, মামাদের ঘরে, খালাদের ঘরে, (আবার) এমন সব ঘরেÑ যার চাবি তোমাদের অধিকারে রয়েছে, কিংবা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে (কিছু খাও); অতপর এতেও কোনো দোষ নেই যে, (এসব জায়গায়) তোমরা সবাই একত্রে খাবে কিংবা আলাদা আলাদা খাবে, তবে যখনি (এসব) ঘরে প্রবেশ করবে তখন একে অপরের প্রতি সালাম করবে, এটা হচ্ছে আল্লাহর কাছ থেকে (তারই নির্ধারিত) কল্যাণময় এক পবিত্র অভিবাদন; এভাবেই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্যে তার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাতে করে তোমরা বুঝতে পারো। ২৪ : ৬১।



১১) সচ্ছল হোক কিংবা অসচ্ছলÑ সর্বাবস্থায় যারা (আল্লাহর পথে) নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, যারা নিজেদের ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষের অপরাধসমূহ যারা ক্ষমা করে দেয়; (আসলে) ভালো মানুষদের আল্লাহ তায়ালা (হামেশাই) ভালোবাসেন। ৩ : ১৩৪। অথবা এরা কি অন্যান্য মানব সন্তানদের ব্যাপারে হিংসা (বিদ্বেষ) পোষণ করে, যাদের আল্লাহ তায়ালা নিজস্ব ভান্ডার থেকে (জ্ঞান, কৌশল ও রাজনৈতিক ক্ষমতা) দান করেছেন, (অথচ) আমি তো ইবরাহীমের বংশধরদেরও (আমার) গ্রন্থ (ও সেই গ্রন্থলব্ধ) জ্ঞান-বিজ্ঞান দান করেছিলাম, (এর সাথে) আমি তাদের (এক বিশাল পরিমাণ) রাজত্বও দান করেছিলাম। ৪ : ৫৪।



১২) দয়াময় (আল্লাহ তায়ালা)Ñএর বান্দা তো হচ্ছে তারা, যারা যমীনে নেহায়াত বিন¤্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা (অশালীন ভাষায়) তাদের সম্বোধন করে, তখন তারা নেহায়াত প্রশান্তভাবে জবাব দেয়। ২৫ : ৬৩।



১৩) অথবা এরা কি অন্যান্য মানব সন্তানদের ব্যাপারে হিংসা (বিদ্বেষ) পোষণ করে, যাদের আল্লাহ   তায়ালা নিজস্ব ভান্ডার থেকে (জ্ঞান, কৌশল ও রাজনৈতিক ক্ষমতা) দান করেছেন, (অথচ) আমি তো ইবরাহীমের বংশধরদেরও (আমার) গ্রন্থ (ও সেই গ্রন্থলব্ধ) জ্ঞান-বিজ্ঞান দান করেছিলাম, (এর সাথে) আমি তাদের (এক বিশাল পরিমাণ) রাজত্বও দান করেছিলাম। ৪ : ৫৪।









নৈতিকত


১) তোমরা মিথ্যা দিয়ে সত্যকে পোশাক পরিয়ে দিয়ো না এবং সত্যকে জেনে বুঝে লুকিয়েও রেখো না। ২ : ৪২।


২) তোমরা একে অন্যের অর্থ সম্পদ অন্যায় অবৈধভাবে আত্মসাত করো না, (আবার) জেনে বুঝে অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ ভোগ করার জন্যে এর একাংশ বিচারকদের সামনে ঘুষ (কিংবা উপঢৌকন) হিসেবেও পেশ করো না। ২ : ১৮৮।


৩) যারা আল্লাহ তায়ালার পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং ব্যয় করে তা প্রচার করে বেড়ায় না, প্রতিদান চেয়ে তাকে কষ্ট দেয় না, (এ ধরণের লোকদের জন্যে) তাদের মালিকের কাছে তাদের জন্যে পুরস্কার (সংরক্ষিত) রয়েছে, (শেষ বিচারের দিন) এদের কোনো ভয় নেই, তারা (সেদিন) দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হবে না। ২: ২৬২।


৪) হে ঈমানদার বান্দারা, তোমরা আল্লাহ তায়ালার নিদর্শনসমূহের অসম্মান করো না, সম্মানিত মাসগুলোকেও (যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্যে) কখনো হালাল বানিয়ে নিয়ো না, (আল্লাহর নামে) উৎসর্গীকৃত জন্তুসমূহ ও যেসব জন্তুর গলায় (উৎসর্গের চিহ্ন হিসাবে) পট্টি বেঁধে দেয়া হয়েছে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহর পবিত্র (কাবা) ঘরের দিকে রওনা দিয়েছে (তাদের তোমরা অসম্মান করো না), তোমরা যখন এহরামমুক্ত হবে তখন তোমরা শিকার করতে পারো, (বিশেষ) কোনো একটি সম্প্রদায়ের বিদ্বেষÑ (এমন বিদ্বেষ যার কারণে) তারা তোমাদের আল্লাহ তায়ালার পবিত্র মাসজিদে আসার পথ বন্ধ করে দিয়েছিলো, যেন তোমাদের (কোনো রকম) সীমালংঘন করতে প্ররোচিত না করে, তোমরা (শুধু) নেক কাজ ও তাকওয়ার ব্যাপারেই একে অপরের সহযোগিতা করো, পাপ ও বাড়াবাড়ির কাজে (কখনো) একে অপরের সহযোগিতা করো না, সর্বাবস্থায়ই আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো, কেননা আল্লাহ তায়ালা (পাপের) দন্ডদানের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর! ৫ : ২।


৫) সেসব লোকদের তুমি (আল্লাহর বিচারের জন্যে) ছেড়ে দাও, যারা তাদের দ্বীনকে নিছক খেল-তামাশায় পরিণত করে রেখেছে এবং এ পার্থিব জীবন যাদের প্রতারণার জালে আটকে রেখেছে, তুমি এ (কোরআন) দিয়ে (তাদের আমার কথা) স্মরণ করাতে থাকো, যাতে করে কেউ নিজের অর্জিত কর্মকান্ডের ফলে ধ্বংস হয়ে যেতে না পারে, (মহাবিচারের দিন) তার জন্যে আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কোনো সাহায্যকারী বন্ধু এবং সুপারিশকারী থাকবে না। সে যদি নিজের সবকিছু দিয়েও দেয়, তবু তার কাছ থেকে (সেদিন তা) গ্রহণ করা হবে না; এরাই হচ্ছে সে (হতভাগ্য) মানুষ, যাদের নিজেদের অর্জিত গুনাহের কারণে তাদের ধ্বংস করে দেয়া হবে, আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করার কারণে তাদের জন্যে (আরো থাকবে) ফুটন্ত পানি ও মর্মন্তুদ শাস্তি। ৬ : ৭০।


৬) আল্লাহ তায়ালা (ইতিপূর্বেও) এ কেতাবের মাধ্যমে তোমাদের ওপর আদেশ নাযিল করেছিলেন যে, তোমরা যখন দেখবে (কাফেরদের কোনো বৈঠকে) আল্লাহ তায়ালার নাযিল করা কোনো আয়াত অস্বীকার করা হচ্ছে এবং তার সাথে ঠাট্টা-বিদ্রপ করা হচ্ছে, তখন তোমরা তাদের সাথে (এ ধরনের মজলিসে) বসো না, যতোক্ষণ না তারা অন্য কোনো আলোচনায় লিপ্ত হয়, (এমনটি করলে) অবশ্যই তোমরা তাদের মতো হয়ে যাবে (জেনে রেখো), আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই সব কাফের ও মোনাফেকদের জাহান্নামে একত্রিত করে ছাড়বেন। ৪ : ১৪০।


৭) (হে মোহাম্মদ,) তুমি বলো, এসো আমিই (বরং) তোমাদের বলে দেই তোমাদের মালিক কোন কোন জিনিস তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন (সে জিনিসগুলো হচ্ছে), তোমরা তার সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবে না, পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করবে, দারিদ্রের আশংকায় কখনো তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না; কেননা আমিই তোমাদের ও তাদের উভয়েরই আহার যোগাই, প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে হোক তোমরা অশ্লীলতার কাছেও যেয়োনা, আল্লাহ তায়ালা যে জীবনকে তোমাদের জন্যে মর্যাদাবান করেছেন তাকে কখনো যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে হত্যা করো না এ হচ্ছে তোমাদের (জন্যে কতিপয় নির্দেশ), আল্লাহ তায়ালা এর মাধ্যমে তোমাদের আদেশ দিয়েছেন, এগুলো যেন তোমরা মেনে চলো, আশা করা যায় তোমরা (তার বণীসমূহ) অনুধাবন করতে পারবে। ৬ : ১৫১।


৮) হে ঈমানদাররা, তোমরা কখনো নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাযের কাছে যেও না, যতোক্ষণ পর্যন্ত (তোমরা এতোটুকু নিশ্চিত না হবে যে,) তোমরা যা কিছু বলছো তা তোমরা (ঠিক ঠিক) জানতে (ও বুঝতে) পারছো, (আবার) অপবিত্র অবস্থায়ও (নামাযের কাছে যেও) না, যতোক্ষণ না তোমরা (পুরোপুরিভাবে) গোসল সেরে নেবে, তবে পথচারী অবস্থায় থাকলে তা ভিন্ন কথা, (আর) যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়ো অথবা প্রবাসে থাকো, কিংবা তোমাদের কেউ যদি পায়খানা থেকে (ফিরে) আসো অথবা তোমরা যদি (দৈহিক মিলনের সাথে) নারী স্পর্শ করো (তাহলে পানি দিয়ে নিজেদের পরিষ্কার করে নেবে), তবে যদি (এসব অবস্থায়) পানি না-ই পাও, তাহলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে নেবে (এবং তার পদ্ধতি হচ্ছে), তা দিয়ে তোমাদের মুখমন্ডল ও তোমাদের হাত মাসেহ করে নেবে, অবশ্যয় আল্লাহ তায়ালা গুনাহ মার্জনাকারী, পরম ক্ষমাশীল। ৪ : ৪৩।


৯) হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরা যখন নামাযের জন্যে দাঁড়াবেÑ তোমরা তোমাদের (পুরো) মুখমন্ডল ও কনুই পর্যন্ত তোমাদের হাত দুটো ধুয়ে নেবে, অতপর তোমাদের মাথা মাসেহ করবে এবং পা দুটো গোড়ালি পর্যন্ত (ধুয়ে নেবে,) কখনো যদি (এমন বেশী) নাপাক হয়ে যাও (যাতে গোসল করা ফরয হয়ে যায়), তাহলে (গোসল করে ভালোভাবে) পবিত্র হয়ে নেবে, যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়ো কিংবা তোমরা যদি সফরে থাকো, অথবা তোমাদের কেউ যদি মলমূত্র ত্যাগ করে আসে অথবা যদি নারী সম্ভোগ করে থাকো (তাহলে পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করো), আর যদি পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে নাও, (আর তায়াম্মুমের নিয়ম হচ্ছে, সেই পবিত্র) মাটি দিয়ে তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসেহ করে নেবে; (মূলত) আল্লাহ তায়ালা কখনো (পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে) তোমাদের কষ্ট দিতে চান না, বরং তিনি চান তোমাদের পাক-সাফ করে দিতে এবং (এভাবেই) তিনি তোমাদের ওপর তার নেয়ামতসমূহ পূর্ণ করে দিতে চান, যাতে করে তোমরা তার কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারো। ৫ : ৬।


১০) তুমি (এবাদাতের উদ্দেশ্যে কখনো) সেখানে দাঁড়াবে নাÑ তোমার তো দাঁড়ানো উচিত সেখানে, যে মাসজিদ প্রথম দিন থেকেই আল্লাহর ভয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে এমন কিছু মানুষ আছে, যারা (ঈমান ও আমলের ক্ষেত্রে) নিজেরা সব সময় পাক-পবিত্র হওয়া পছন্দ করে; আর আল্লাহ তায়ালা তো পাক-সাফ লোকদেরই ভালোবাসেন। ৯ : ১০৮।


১১) এতীমদের মাল সম্পদের কাছেও যেয়ো না, তবে এমন কোনো পন্থায় য (এতীমের জন্যে) উত্তম (বলে প্রমাণিত) হয় তা বাদেÑ যতোক্ষণ পর্যন্ত সে (এতীম) তার বয়োপ্রাপ্তির পর্যায়ে উপনীত হয় এবং তোমরা (এদের দেয়া যাবতীয়) প্রতিশ্রæতির মেনে চলো, কেননা (কেয়ামতের দিন এ) প্রতিশ্রæতির ব্যাপারে (তোমাদের) জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ১৭ : ৩৪।


১২) যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, (অযথা) তার পেছনে পড়ো না; কেননা (কেয়ামতের দিন) কান, চোখ ও অন্তর, এ সব কয়টির (ব্যবহার) সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে। ১৭ : ৩৬।


১৩) আমি অবশ্যই আদম সন্তানদের মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে আমি ওদের চলাচলের বাহন দিয়েছি এবং তাদের পবিত্র (জিনিসসমূহ দিয়ে) আমি রেযেক দান করেছি, অতপর আমি অন্য যতো কিছু সৃষ্টি করেছি তার অধিকাংশের ওপরই আমি তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। ১৭ : ৭০।


১৪) (দয়াময় আল্লাহ তায়ালার নেক বান্দা তারাও,) যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না, (ঘটনাচক্রে) যদি কোনো অযথা বিষয়ের তারা সম্মুখীন হয়ে যায় তাহলে একান্ত ভদ্রতার সাথে তারা (সেখান থেকে) সরে পড়ে। ২৫ : ৭২।


১৫) যদি এ (মিথ্যা ঘটনা)-টি শোনার পর মোমেন পুরুষ ও মোমেন নারীরা নিজেদের ব্যাপারে একটা ভালো ধারণা পোষণ করতো! কতো ভালো হতো যদি (তারা একথা) বলতো, এটা হচ্ছে এক নির্জলা অপবাদ মাত্র! ২৪ : ১২।


১৬) (হে নবী,) তুমি মোমেন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে (নি¤œগামী ও) সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহকে হেফাযত করে; এটাই (হচ্ছে) তাদের জন্যে উত্তম পন্থা; (কেননা) তারা (নিজেদের চোখ ও লজ্জাস্থান দিয়ে) যা করে, আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে পূর্ণাংগভাবে অবহিত রয়েছেন। ২৪ : ৩০।


১৭) (হে নবী, একইভাবে) তুমি মোমেন নারীদেরও বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নি¤œগামী করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাযত করে, তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে না বেড়ায়, তবে তার (শরীরের) যে অংশ (এমনিই) খোলা থাকে (তার কথা আলাদা), তারা যেন তাদের বক্ষদেশ মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখে, তারা যেন তাদের স্বামী, তাদের পিতা, তাদের শ্বশুর, তাদের ছেলে, তাদের স্বামীর (আগের ঘরের) ছেলে, তাদের ভাই, তাদের ভাইর ছেলে, তাদের বোনের ছেলে, তাদের (সচরাচর মেলামেশার) মহিলা, নিজেদের অধিকারভুক্ত সেবিকা দাসী, নিজেদের অধীনস্থ (এমন) পুরুষ যাদের (মহিলাদের কাছ থেকে) কোনো কিছুই কামনা করার নাই, কিংবা এমন শিশু যারা এখনো মাহিলাদের গোপন অংগ সম্পর্কে কিছুই জানে নাÑ (এসব মানুষ ছাড়া তারা যেন) অন্য কারো সামনে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, (চলার সময়) যমীনের ওপর তারা যেন এমনভাবে নিজেদের পা না রাখেÑ যে সৌন্দর্য তারা গোপন করে রেখেছিলো তা (পায়ের আওয়াযে) লোকদের কাছে জানাজানি হয়ে যায়; হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, (ত্রæটি বিচ্যুতির জন্যে) তোমরা সবাই আল্লাহর দরবারে তাওবা করো, আশা করা যায় তোমরা নাজাত পেয়ে যাবে। ২৪ : ৩১।


১৮) তোমরা তো আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে কেবল মূর্তিসমূহের পূজা করো এবং (স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে) মিথ্যা কথা উদ্ভাবন করো; আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে যেসব মূর্তির তোমরা পূজা করো, তারা তোমাদের কোনোরকম রেযেকের মালিক নয়, অতএব তোমরা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কাছেই রেযেক চাও, শুধু তারই এবাদাত করো এবং তার (নেয়ামতের) শোকর আদায় করো; (কেননা) তোমাদের তার কাছেই ফিরিয়ে নেয়া হবে। ২৯ : ১৭।


১৯) হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, যদি কোনো দুষ্ট (প্রকৃতির) লোক তোমাদের কাছে কোনো তথ্য নিয়ে আসে, তবে তোমরা (তার সত্যতা) পরখ করে দেখবে (কখনো যেন আবার এমন না হয়), না জেনে তোমরা কোনো একটি সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে ফেললে এবং অতপর নিজেদের কৃতকর্মের ব্যাপারে তোমাদেরই অনুতপ্ত হতে হলো! ৪৯ : ৬।


২০) মোমেনরা তো (একে অপরের) ভাই ব্রাদার, অতপর (বিরোধ দেখা দিলে) তোমাদের ভাইদের মাঝে মীমাংসা করে দাও, আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমাদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করা হবে। ৪৯ : ১০।


২১) হে ঈমানদার লোকেরা, তোমরা নিজেদের ও নিজেদের পরিবার পরিজনদের (জাহান্নামের সেই কঠিন) আগুন থেকে বাঁচাও, তার জ¦ালানি হবে মানুষ আর পাথর, (সে) জাহান্নামের (প্রহরা যাদের) ওপর (আর্পিত), সেসব ফেরেশতা সবাই হচ্ছে নির্মম ও কঠোর, তারা (দন্ডাদেশ জারি করার ব্যাপারে) আল্লাহর কোনো আদেশই অমান্য করবে না, তারা তাই করবে যা তাদের করার জন্যে আদেশ করা হবে। ৬৬ : ৬।


২২) (খাবার দেয়ার সময় এরা বলে,) আমরা শুধু আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্যেই তোমাদের খাবার দিচ্ছি, (বিনিময়ে) আমরা তোমাদের কাছ থেকে কোনো রকম প্রতিদান চাই নাÑ না (চাই) কোনো রকম কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন। ৭৬ : ৯।














পারিবারিক ও আত্মীয়তার সম্পর্ক


১) যখন আমি বনী ইসরাঈলদের কাছ থেকে (এ মর্মে) প্রতিশ্রæতি নিয়েছিলাম যে, তোমরা আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কারো এবাদাত করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে, আত্মীয় স্বজন, এতীম-মেসকীনদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে, মানুষদের সুন্দর কথা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত প্রদান করবে; (কিন্তু এ সত্তে¡ও) তোমাদের মধ্যে সামান্য কিছু সংখ্যক লোক ছাড়া অধিকাংশই অতপর ফিরে গেছো, এভাবেই তোমরা (প্রতিশ্রæতি থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলে। ২ : ৮৩।

২) তোমরা এক আল্লাহ তায়ালার এবাদাত করো, কোনো কিছুকেই তার সাথে অংশীদার বানিয়ো না এবং পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো, (আরো) যারা (তোমাদের) ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, এতীম, মেসকীন, আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, (তোমার) পথচারী সংগী ও তোমার অধিকারভুক্ত (দাস দাসী, তাদের সবার সাথেও ভালো ব্যবহার করো), অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা এমন মানুষকে কখনো পছন্দ করেন না, যে অহংকারী ও দাম্ভিক। ৪ : ৩৬।

৩) তোমরা কখনো এতীমদের সম্পদের কাছেও যাবে না, তবে উদ্দেশ্য যদি নেক হয় তাহলে সে একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমায় পৌছা পর্যন্ত (কোনো পদক্ষেপ নিলে তা ভিন্ন কথা), পরিমাপ ও ওযন (করার সময়) ন্যায্যভাবেই তা করবে, আমি (কখনো) কারো ওপর তার সাধ্যসীমার বাইরে কোনো দায়িত্ব চাপাই না, যখনি তোমরা কোনো ব্যাপারে কথা বলবে তখন ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে, যদি তা (তোমার একান্ত) আপনজনের (বিরুদ্ধে)-ও হয়, তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে দেয়া সব অংগীকার পূরণ করো এ হচ্ছে তোমাদের (জন্যে আরো কতিপয় বিধান); এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের আদেশ দিয়েছেন (তোমরা যেন এগুলো মেনে চলো), আশা করা যায় তোমরা উপদেশ গ্রহণ করতে পারবে। ৬ : ১৫২।

৪) হে মানুষ, তোমরা যারা ঈমান এনেছো, তোমরা নবীর ঘরে প্রবেশ করো না, অবশ্য যখন তোমাদের খাওয়ার জন্যে (আসার) অনুমতি দেয়া হয় (তাহলে) সে অবস্থায় এমন সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে প্রবেশ করো, যাতে তোমাদের (খাওয়ার জন্যে) অপেক্ষা করতে না হয়, কিন্তু কখনো যদি তোমাদের ডাকা হয় তাহলে (সময়মতোই) প্রবেশ করো, অতপর যখন খাবার (গ্রহণ) শেষ করে ফেলবে তখন সাথে সাথে (সেখান থেকে) চলে যেয়ো এবং (সেখানে কোনো অর্থহীন) কথাবার্তায় নিমগ্ন হয়ো না; তোমাদের এ বিষয়টি নবীকে কষ্ট দেয়, সে তোমাদের (এ কথা বলতে) লজ্জাবোধ করে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সত্য বলতে মোটেই লজ্জাবোধ করেন না; (হ্যাঁ) তোমাদের যদি নবীপত্মীদের কাছ থেকে কোনো জিনিসপত্র চাইতে হয় তাহলে পর্দার আড়াল থেকে চেয়ে নিয়ো, এটা তোমাদের ও তাদের অন্তরকে পাক-সাফ রাখার জন্যে অধিকতর উপযোগী; তোমাদের কারো জন্যেই এটা বৈধ নয় যে, তোমরা আল্লাহর রসূূলকে কষ্ট দেবে (না এটা তোমাদের জন্যে বৈধ যে), তোমরা তার পরে কখনো তার স্ত্রীদের বিয়ে করবে, এটা আল্লাহ তায়ালার কাছে একটি বড়ো (অপরাধের) বিষয়। ৩৩ : ৫৩।



সাম্য


১) আমি অবশ্যই আদম সন্তানদের মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে আমি ওদের চলাচলের বাহন দিয়েছি এবং তাদের পবিত্র (জিনিসসমূহ দিয়ে) আমি রেযেক দান করেছি, অতপর আমি অন্য যতো কিছু সৃষ্টি করেছি তার অধিকাংশের ওপরই আমি তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। ১৭ : ৭০।

২) মোমেনরা তো (একে অপরের) ভাই-ব্রাদার, অতএব (বিরোধ দেখা দিলে) তোমাদের ভাইদের মাঝে মীমাংসা করে দাও, আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমাদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করা হবে। ৪৯ : ১০।

৩) হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, যখন মজলিসসমূহে (একটু নড়েচড়ে) জায়গা প্রশস্ত করে দিতে তোমাদের বলা হয়, তখন তোমরা জায়গা প্রশস্ত করে দিও, (তাহলে) আল্লাহ তায়ালাও তোমাদের জন্যে (জান্নাতে) এভাবে জায়গা প্রশস্ত করে দেবেন, (আবার) কখনো যদি (জায়গা ছেড়ে) ওঠে দাঁড়াতে বলা হয়, তাহলে ওঠে দাঁড়িয়ে যেও, তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই কেয়ামতের দিন তাদের মহামর্যাদা দান করবেন; তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তায়ালা সে ব্যাপারে পূর্ণ খবর রাখেন। ৫৮ : ১১।



সুতরাং শুরুর প্রশ্নটিÑ আমার কাজে লাগবে এমন কিছু কোরআনে আছে কি?  Ñ এর উত্তরে কোরআনের এই আয়াতটি যথেষ্টঃ


ৃ আমি তোমাকে (মুহম্মদ) কতিাবটি পাঠযি়ছেি সব কছিু পরস্কিার করে র্বণনা কর;ে যারা আল্লাহর প্রতি অনুগত (মুসলমি) তাদরে জন্য পথ প্রর্দশক, অনুগ্রহ ও সুসংবাদ হসিবে।ে (১৬:৮৯)




আয়াতের শেষে দেওয়া সংখ্যাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে সূরাহ এবং আয়াতের নম্বার।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

তাওহীদ

 বিষয় ঃ তাওহীদ অধ্যায় ০১ ঃ আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের সৃষ্টিকর্তা। অধ্যায় ০২ ঃ আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের একমাত্র সার্বভৌম মালিক। অধ্যায় ০৩ ঃ ভালো মন্দ সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছায়ই সাধিত হয়। অধ্যায় ০৪ ঃ রেযেক শুধু আল্লাহর ইচ্ছায়ই বাড়ে কমে। অধ্যায় ০৫ ঃ আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। অধ্যায় ০৬ ঃ আল্লাহ তায়ালাই শুধু গায়বের খবর জানেন। অধ্যায় ০৭ ঃ রসূল (স.) গায়েব জানতেন না। অধ্যায় ০৮ ঃ সন্তান দানের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার। অধ্যায় ০৯ ঃ শেফা দানকারী হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। অধ্যায় ১০ ঃ বিপদের সাথী একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। অধ্যায় ১১ ঃ প্রার্থনা করতে হবে সরাসরি আল্লাহর কাছে। অধ্যায় ১২ ঃ আল্লাহ তায়ালাই বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির দোয়া কবুল করেন। অধ্যায় ০১ ঃ আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের সৃষ্টিকর্তা সূরা আল বাকারাহ ২৯, সূরা আল আনয়াম ১, ৭৩, ১০১, সূরা আল আম্বিয়া ৩৩, সূরা আল মোমেনুন ১২-১৪, সূরা আন নূর ৪৫, সূরা আল ফোরকান ২, সূরা লোকমান ১০, সূরা আর রহমান ১৪-১৫। তিনিই সেই মহান সত্তা, যিনি এ পৃথিবীর সব কিছু তোমাদের (ব্যাবহারের) জন্যে তৈরী করেছেন, অতপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন এবং তাকে সাত আসমানে ব...

CCTV Footage Screenshot